গর্ভবতী মহিলাদের অতিরিক্ত যত্ন প্রয়োজন। এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ড. চৌধুরী মাহমুদা আক্তার (শিউলী)

খাদ্য
গর্ভবতী মায়ের জন্য একটি সুষম খাদ্য প্রয়োজন, এর দ্বারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং খাদ্যের ঘাটতি দূর করা সম্ভব। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও প্রচুর মৌসুমি ফল ও শাকসবজি খান। কেনা সবজি ও ফল বাজার থেকে আনার পর আধা ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফরমালিনের ঝুঁকি এড়ানো যায়। এই সময়ে, আপনার প্রচুর বিশুদ্ধ জল পান করা উচিত। অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।

পরিমিত হালকা কাজ
একজন মহিলার গর্ভাবস্থায় প্রথম দুই থেকে তিন মাস এবং শেষ তিন মাস অতিরিক্ত পরিশ্রম ছাড়াই হালকাভাবে হাঁটা উচিত। ভারী জিনিস বহন বা তুলবেন না। পিচ্ছিল পৃষ্ঠে হাঁটবেন না এবং সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় বিশেষ যত্ন নিন।

ঘুম
এ সময় দিনে অন্তত দুই ঘণ্টা ঘুম বা বিশ্রাম এবং রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। ঘুমানোর সময় বা বিশ্রামের সময় বাম দিকে শুয়ে থাকা ভালো।

পরিধেয়
গর্ভবতী মায়েদের পরিষ্কার, আরামদায়ক, সহজে পরিধান করা এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা উচিত। সঠিক মাপের এবং নরম জুতা পরতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই হিল পরিহার করা উচিত।

ভ্রমণ
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস এবং শেষ তিন মাসে দীর্ঘ সফরে না যাওয়াই ভালো। এলোমেলো রাস্তায় বা ঝাঁকুনি প্রবণ যানবাহনে ভ্রমণ করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সকাল ও বিকেলে কিছু সময় স্বাস্থ্যকর ও মনোরম পরিবেশে ভ্রমণ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভালো, এতে শরীর সুস্থ থাকে এবং মন প্রফুল্ল থাকে। তাই ফুলের বাগান, লেকের তীরে, পার্ক- এই জায়গাগুলো ঘুরে আসা উচিত।

শরীরের বিশেষ যত্ন ও রোগ-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
এই সময়ে, আপনার প্রতিদিন সাবান দিয়ে ভালভাবে গোসল করা উচিত এবং আপনার নখ এবং পায়ের নখ ছোট রাখা উচিত। গর্ভাবস্থায় মায়ের দাঁত খুব নরম হয়ে যায়, তাই দাঁত ও মাড়ির বিশেষ যত্ন নিতে হবে। চার থেকে আট মাস বয়সের মধ্যে টিটেনাস টিকা দিতে হবে। এ সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে। তাই ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, চিকেন পক্স ইত্যাদি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীদের থেকে দূরে থাকুন।

বিশেষ সতর্কতা
অতিরিক্ত আবেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ভয়, রোগ-শোক প্রভৃতি গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাই তা পরিহার করতে হবে। প্রথম তিন মাস এবং শেষ তিন মাস স্বামীকে সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। ডিহাইড্রেশন রোধ করতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করুন। সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

Leave a Comment